Information

কাঁসা- পিতল চেনার উপায়-

Pitol chenar upay

কাঁসা- পিতল চেনার উপায়-

১.কাঁসা মূলত কাস্টমাইজ করা সহজ না বলেই সম্পূর্ণ গরম অবস্থায় একটা সাধারণ গোলাকার চাতকি থেকে চার পাঁচজন পিটিয়ে পিটিয়ে থালা, গ্লাস, বাটি এবং স্কুল ও মন্দিরের ঘন্টার আকৃতি দিতে সক্ষম হোন। কাঁসার গ্লাসের আকৃতি দেয়া খুবই কস্টসাধ্য। এসব জিনিস ব্যাতীত কাঁসার আর কিছুই হয়না।

২.কাঁসায় শব্দ করলে শব্দের প্রতিধ্বনি হয়।

৩. কাঁসার পন্য তৈরি এবং কারিগরের খরচ বেশি হওয়ায় এর দামও বেশি।

৪.কাঁসা হচ্ছে রাং/টিন (Tin) এবং তামা (Copper) এর সংমিশ্রণে তৈরী একটি সংকর ধাতু।

৫.কাঁসা কালচে সোনালি বর্ণের।

পিতলঃ

১.পিতল কাস্টমাইজ করা সহজ। তাই যেকোনো ব্যবহার্য জিনিস এবং গৃহসজ্জার জিনিস সবই পিতল দিয়ে তৈরি।

১.পিতলে শব্দ করলে সরাসরি টুংটাং শব্দ হয়।

৩.পিতল হচ্ছে দস্তা (Zinc) এবং তামা (Copper) এর সংমিশ্রণে তৈরী একটি মিশ্র ধাতু।

৪.পিতল উজ্জল সোনালি বর্ণের.

তাছাড়া দুটো পাশাপাশি রাখলেও সরাসরি পার্থক্য বুঝা যায়।

কাঁসা-পিতল কেনো কিনবেন?

১. ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবের বিরুদ্ধে পিতল বেশ কার্যকর।

২.পিতলে যথেষ্ট পরিমাণে দস্তার উপস্থিতি বিদ্যমান। দস্তা প্রদাহ কমাতে, দ্রুত ক্ষত নিরাময়, কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৩.কাঁসা-পিতল অম্লত্ব হ্রাস করার মাধ্যমে গ্যাসট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো বিভিন্ন ধরনের হজমের সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করে।

৪.রান্নায় অতিরিক্ত চর্বি ও তেলের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে খাবারের সর্বত্রে সমানভাবে তাপ বিতরণ করে।

৫.কাঁসা-পিতলে যথেষ্ট পরিমাণে তামা থাকে, যেটি চর্বি ভেঙে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৬.শরীরের সবখানে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে।ফলে কালশিটে পড়া পেশি, ব্যথা হওয়া জয়েন্টগুলো এবং এমনকি বাত/আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রেও ভালো উপকার পাওয়া যায়।

৭.দীর্ঘদিন টেকসই। একবার কিনলে তা ৩০/৪০ বছরের বেশি ব্যবহার করা যায়।

৮.বাড়িতে বনেদিয়ানা/ আভিজাত্যের ছোয়া আনতে।

৯.ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে।

১০.কাঁসা-পিতল পুরাতন হলেও পুনঃরাই বিক্রয়যোগ্য।

পিতল-কাঁসা পরিষ্কার করার নিয়ম-

১। লবণ আর লেবুর রস -বাসন মাজার ফোমের মধ্যে একটু লবণ আর লেবুর রস নিয়ে বাসনপত্রের ওপর নিয়ে ঘষতে থাকুন, এর ফলে বাসনপত্রের কালচে ভাব দূরে চলে যাবে। এরপর পাণি দিয়ে ধুয়ে নিন বাসনপত্র একেবারে নতুনের মত চকচক করবে।

২। তেঁতুল -পিতল বা কাঁসা বাসন মাজার ক্ষেত্রে তেঁতুলের ব্যবহার অনস্বীকার্য। পিতল-কাঁসার বাসনে তেঁতুল নিয়ে ঘষে দিন।দেখবেন একেবারে নতুন বাসনের মত চকচক করছে।

৩। ছাই -পিতল-কাঁসার বাসনপত্র মাজতে ছাই ব্যবহার করতে পারেন। একটা মাজুনিতে একটু ছাই নিয়ে একটু ঘষে নিলেই দেখবেন বাসনপত্র একেবারে নতুনের মতো ঝকঝক করবে।

৪। বেকিং সোডা – একটা মাজুনিতে বিকিংসোডা দিয়ে ভালোমতো ঘষে নিয়ে পরিষ্কার করুন। অনেকে আবার বেকিং সোডার সাথে লবন মিশিয়ে ও পিতল-কাঁসার বাসন পত্র পরিষ্কার করে থাকেন।

৫। ভিনিগার -পিতল-কাঁসার বাসনপত্রের উপর ভিনিগারটা ছিটিয়ে দিন, তারপর কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। আধঘন্টা পর একটা ছোবড়া দিয়ে ঘষতে থাকুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিলেই দেখবেন বাসনপত্র একেবারে নতুনের মত চকচক করছে।

৬। মেটাল পলিশ- চকচকে ভাব চাইলে পিতল মেটাল পলিশ সুতি নরম কাপড়ে দিয়ে ঘষে নিলে একদম পুরো নতুন হয়ে যাবে।

⚠️তবে এই কাজে খসখসে জিনিসের ব্যবহার (যেমনঃ তারের জালি) আপনার প্রিয় পিতলের পাত্রের উপর আঁচড়ের মতো দাগ তৈরি করতে পারে এবং তাতে নষ্ট হয়ে যেতে পারে তার সৌন্দর্য | সেই জন্য ফোম বা কাপড় ব্যবহার করবেন।

⚠️কলের পানিতে পিতল-কাঁসার বাসনপত্র ছোপ ছোপ পানির দাগ পরতে পারে।

⚠️পিতল-কাঁসার বাসনপত্র ধোয়ার পরে অবশ্যই শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে হবে।

পিতল-কাঁসা কি কালো হয়ে যায়??

জ্বি হয়। পিতল-কাঁসা হল সোনার মতো, রেগুলার ব্যবহার এ আদ্র আবহাওয়া, জলীয়বাষ্প, আদ্রতা,পানি এর সংষ্পর্ষে কিছু টা কালো হয়ে যায়। কিন্তু নিয়ম মতো পরিষ্কার করলে সোনার মতোইই আজীবন এ-র কালার গ্যারান্টি। তবে চকচকে ভাব চাইলে পিতল মেটাল পলিশ দিয়ে ঘষে নিলে একদম পুরো নতুন হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *